একদিন ভোর বেলা পেলে চা’র তেষ্টায়,
গেলো মনু রাস্তার ওপারের ছাপড়ায়;
চা’র সাথে ডাইলপুরী, আরো সাথে সস্,
পানে ছিল জর্দা, ধোঁয়া ছাড়ে ফস্।
এর মাঝে সেথা এল রোগা আর পটকা,
ছোটোখাটো লোক এক, মনে লাগে ঝটকা।
লোক দেখে নয় সেতো, ফ্যামিলির কথা,
দুই ভাই এক বোন, সেথা আকুলতা!!
… … …
… … …
“একটু চেপে এদিক এসো, কিরনমালার ভাই,
এইখানেতে শুষ্ক মরু, একটু পানি চাই।
যত্ত খুশি খাওগে হেথায়, চা পুরি আর কলা,
ঠান্ডা পেটে চিন্তা করে, বুইঝো আমার জ্বালা।”
গুরু যখন ব্যস্ত এ্যাত, রসের আলাপ কাজে,
বাগড়া দিতে হাজির সেথা, পুঁচকে ছোঁড়া বাজে!
বললো, “ও ভাই, সাইডে চাপেন, বাবার সাথে কাজ,
ডাকলো তোমায় বাসায় মা যে, খবর আছে আজ!!”
চুলকে মাথা ভাবছে মনু, খবর দিলো কেডায়,
মনটা চাহে ঐ ব্যাটারে, বস্তা ভরে পিডায়।
কুঁচকে কপাল এসব ফেলে, বস্তা বাঁধে পিঠে,
আনন্দটা হাওয়ায় ফুড়ুৎ, মনটা হল তিতে।
দোকানটা আটকিয়ে, বাড়ি যাওয়া পথে,
মনু ভাই মনে মনে, ফিউচার আঁকে;
ভেবে ভেবে প্রেশারটা, হয়ে গেল হাই,
দরজায় করে নক, জানে পানি নাই।
মনে বহে ঝড়ো হাওয়া, তুমুল এক বৃষ্টি,
আঁধারটা চেয়ে আছে, নিয়ে বিষ দৃষ্টি।
ভয়াবহ নিনাদে, কান ফাঁটে কাঁপে হৃদ,
হতে পারে লাঠিপেটা, কাঁপে বিশ্বাস ভিত।
খুট করে খুলে গেল, দরজাটা হাঁ করে,
হাসিমুখে গিন্নি বলছে কী সুরে সুরে,
বাড়ি থেকে গেলে কেন? না খেয়ে কিছু,
রেঁধেছি যে ইলিশের মাথা দিয়ে কচু।
বাস্তব নাকি ঘোর, মনু পুরা কনফুস,
বেকুবের মত চেয়ে, ক্ষনিকেই হয় হুশ।
পোলাখান পাঁজি বেশি, দিয়েছিলো ডরায়ে,
যাঁর মনে যা যা ঘোরে, অযথাই ফাঁড়া এ।
খুশি মনে হাত ধুয়ে, খেতে বসে মনু,
হাতপাখা বাতাসে, সাথে তার জানু।
এর মাঝে হঠাৎই দরজায় ঠক্ ঠক্,
আসলো কে অসময়ে? বেরসিক বুরবক্ …
জানু খোলে দরজাটা, আছে দুটো দাঁড়িয়ে,
মনু পিছে ভীত মুখে, দেখে তাঁরা তাঁড়িয়ে।
জানু বলে আয় ঘরে, পলু তোর কী খবর,
সঙ্গের ওটা কেরে, দেখিনিতো আগে পর।
পলু বলে খাড়ানতো, খাচ্ছে কী বাবাজান,
আমরাও বসে পড়ি? এই নেন খিলি পান।
লোক এটা এপাড়ায়, নতুন এক মেহমান,
পিছু ডেকে ছুটে ছুটে, হয়েছিলো পেরেশান।
কার পিছু, ছুটে কেন? খুলে বল্ পলু রে,
পলু শুনে খুলে জামা, জানু বলে থামা রে!
খুলে বল ঘটনাটা, জামা প্যান্ট গায়ে থাক,
কে আছিস পানি আন, মনু মিয়া দিল হাঁক।
পানি নিয়ে এল তনু। (তনু কে তা চেন না?,
এটাই তো সেই ছেলে, মনু বাপ, জানু মা।)
পলুটাকে দেখে তনু, খুশি হয়ে বলে ‘হাই’,
‘ভাগনে, আছো ক্যালা?’, বলে পলু সহসাই।
(ভ্যাবাচ্যাকা খেয়োনাকো, মামা নাকি হবে ভাই,
পলু অতি ভাল ছেলে, আগে কি তা বলি নাই?
সব কিছু ভাল তার, প্রবলেম এক ভাগ,
চেম্বারে গোলমাল! থাক, থাক; চেপে যাক।)
ঘটনাটা হলো গিয়ে, পলু কেশে বললে,
বাড়ি পানে পড়ি মরি, মনু বাবা ছুটলে,
হঠাৎ এই ছোঁকড়া, হয়ে বিভ্রান্ত,
ডাকাডাকি ছোটাছুটি, বড়ই অশান্ত।
ইয়ে মানে হয়েছে কি .., খোলে মুখ মেহমান,
বোন নিয়ে কী কী জানি, বলেছিলো চাচাজান,
বুঝি নি তো কিছু সেটা, এন্টেনা ছাড়িয়ে,
হুশ ফিরে খুঁজে দেখি, চাচা গেলো হারিয়ে।
খুক খুক কাশে মনু, পানি গেল সর্কে,
তাই দেখে মেহমান, গেল নাকি ভড়কে!
চিঁ চিঁ করে বলে উঠে, আমরাতো দুই ভাই,
দাদা আর আমি শুধু, আমাদের বোন নাই।
জানু শুনে হতবাক, শুনি একি মিনসে!
রাগে ভরা চোখ দেখে, মনু গেল চিমসে।
ধ্যাত্তরি ব্যাডলাক, খারাপ আজ দিনভর,
তনুটাকে দেখে এলো, আইডিয়া! কাটে ডর!
আরে জানু শোনো তবে, ছেলে বড় হয়েছে,
দিতে হবে বিয়ে-শাদী, ঘটনাটা ঠিকাছে?
খুঁজি তাই পাত্রী, মাঝে মাঝে হয় ভ্রম,
ভাল কিছু হতে হলে, দিতে হয় ম্যালা শ্রম।
কেটে গেল সব মেঘ, পলু খায় গপাগপ,
খাওয়া শেষে সবে মিলে, করে কিছু গপসপ।
মনে মনে মনু মিয়া, করে সংকল্প,
থাকবে সে ভাল পথে, শেষ হল গল্প।
(কাল্পনিক নাটুকে ঘটনার সাথে জীবিত বা মৃত কোন ব্যক্তি বা ফোরামিকের সম্পর্ক খুঁজে পেলে তার দায়দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে — ছড়াবাজ কোনক্রমেই দায়ী হবে না)
ভাই “ব্যাডলাক খারাপ ছিল” এই নাম দেওয়ার পেছনে কারণ কি?
আর এই ছড়ার ব্যাখ্যা টা বলবেন প্লিজ। আমার খুব ভালো লেগেছে। প্লিজ
ইয়ে মানে, এ্যাতদিন পরে সেটা আর মনে নাই … তবে আমাদের মনু ভাইয়ের luck খারাপ ছিল, নাহলে বউয়ের কাছে ঐদিন ধরা খাওয়ার উপক্রম হত না।
কাহিনীর ক্যারেক্টারগুলো এরকম। প্রৌঢ় মনু ভাই, বাজারে তার কম্পিউটারের দোকান। তার বউ জানু, ছেলে তনু। পলু হল আধপাগলা যুবক, যে মনু ভাইকে আব্বাজান ডাকে। দুই ভাই এক বোন ওয়ালা লোকটা আর কেউ না — উনি অরুণ দাদা; অরুণকে দেখেই – অরুণ, বরুণ, কিরণমালা — মনু ভাইয়ের চিন্তাটা এভাবে চলেছিলো; আফটার অল দুত্তু বুড্ডা বলে কথা!
চুপি চুপি বলি – ইনারা সকলেই প্রজন্ম ফোরামে ঘুরাঘুরি করেন। সুতরাং এই ব্যাখ্যা ঘুণাক্ষরেও সেখানে (http://forum.projanmo.com/topic46225.html) প্রচার করবেন না। 😀